“স্মৃতি সততই সুখের”

From the shelter of my mind
through the window of my eyes...
(Originally written in 1998, one year after Kaku passed away from lung cancer.)
স্থান: ২০২  
কাল: ১৯৯৪ এর আগে  

কাকু (কুশ): কিরে একা একা হাসছিস কেন ?
আমি: না, একটা মজার কথা মনে পড়ে গেল….
কাকু: তাই বলে একা একা হাসবি?
আমি: ওই মানে যাক্‌গে !
কাকু: ঘন্ট, দেখে যা মোয়াটা কেমন বলদ তৈরী হয়েছে — একা একা হাসছে!
আমি: ওফ্ কাকু বিরক্ত করো না!
কাকু: ঘন্ট…ঘন্ট…
ঘন্ট (খুড়তুতো দাদা): কি বাবা,  চ্যাঁচাচ্ছ কেন?
কাকু: আচ্ছা আমি সবসময় বিরক্ত করি, ঠিকাছে আমি চলে যাবো !

কাকু: এ্যাই মোয়া, মোয়া, এ্যাই মোয়া…
আমি: কিরে বাবা — আমি আর ঘন্ট গল্প করছি ঠাম্মুর ঘরে…
কাকু: আরিব্বাস মোয়া, তুই না পুরো মাধুরী দীক্ষিত-এর মতো দেখতে হয়ে যাচ্ছিস!
আমি: বাজে বোকো না কাকু, আমি সিগারেট আনতে  যেতে পারবো না…
কাকু: প্লিজ, প্লি………..জ!
ঘন্ট: বাবা যাও তো…
কাকু: তুই যা তাহলে…
ঘন্ট: না
আমি: ও নিয়া দেখো না বিরক্ত করছে — বলছে সিগারে…
কাকু: তোকে চ্যাঁচাতে কে বলেছে? যেতে হবে না ঠিকাছে — ভেবেছিলাম একটা দারুণ জিনিস  বানিয়ে খাওয়াবো, খাওয়াবো না যা!
আমি: কি বানাবে কাকু বলো না —
কাকু: না
আমি: প্লিজ বলো…
কাকু: না
ঘন্ট: ওফ্ মোয়া বাদ দে না। বোর করো না তো বাবা —
নিয়া (রিনা/কাকিমা): কুশ, আবার বাচ্চা বাচ্চা দুটো ছেলেমেয়েকে সিগারেট আনতে পাঠাচ্ছ ?
কাকু: বাচ্চা ! কে বাচ্চা ?! জানো তো না দুজনে কি তৈরী হচ্ছে !

কাকু: এই মোয়া, তুই বাড়িতে ছিলি না —-উল্টো দিকের বাড়ির ছাদ থেকে একটা ছেলে সুইসাইড করার চেষ্টা করছিলো —-নিশ্চই তোকে প্রপোস করেছিল , আর তুই না করে দিয়েছিস!
আমি: আরে না! কি যে বলো কাকু!
কাকু: যা যা…বাজে কথা বলিস না! আচ্ছা কানে কানে বল!
আমি: ধ্যাৎ!
কাকু: রিনা রিনা, মোয়া বলছে ——
নিয়া: আবার পাকামো হচ্ছে মোয়া!
আমি: উফ নিয়া! তুমিও কাকুর কথা বিশ্বাস করছো?
নিয়া: আবার কথা! চুপ!
আমি : কি মুশকিল!
কাকু : দেখেছিস ঘন্ট , মোয়াটা কেমন ডুবে ডুবে জল খায়!

ঘন্ট: আচ্ছা বাবা, মোয়া রাস্তায় বেড়িয়েই খালি আমাকে ভালো দেখতে মেয়ে দেখায়! একটাও ভালো দেখতে ছেলে দেখে না —- ওর তো ভালো দেখতে ছেলে দেখা উচিত , বলো ?!
কাকু: আহা! বুঝিস না ! কম্পিটিটর খোঁজে!

কাকু: এই মোয়া দেখে যা — বাড়ির সামনের ব্যাঙ্ক – এ ডাকাত ঢুক্‌ছে !
আমি: কৈ, কৈ?
কাকু: ওই দ্যাখ !
আমি: ওরা তো রাস্তা খুঁড়ছে!
কাকু : হ্যাঁ তাইতো সুড়ঙ্গ বানাচ্ছে, ব্যাঙ্ক – এ ঢুকবে বলে — ঘন্ট দেখে যা!
ঘন্ট : বাবা, ভাল লাগে না রাত্তির দশটার সময় ইয়ার্কি!
কাকু (কিছুক্ষন পর): ওমা! দ্যাখ্, ডাকাতগুলো  ব্যাঙ্ক – এ ঢোকার বদলে ভুল করে অমৃত বস্ত্রালয়ে ঢুকে যাচ্ছে।

আমি: কাকু, কনসেপ্ট দিতে হবে —-
কাকু: দাঁড়া ভেবে বলতে হবে।
আমি: তাড়াতাড়ি ভাবো, এক্ষুনি চাই।
কাকু: নানা, এক্ষুনি হবে না —-আচ্ছা ঠিকাছে দশটা পাকা চুল তুলে দে — তারপর বলছি।
আমি: কন্ডিশন ছাড়া কিচ্ছু করো না, না?
কাকু: দে না তুলে — একটা ক্যাসেট ও দেবো।
আমি: ঠিক দেবে?
কাকু: হ্যাঁ! প্রমিস।

কাকু: কিরে তোদের সুমনের প্রোগ্র্যাম কেমন লাগল?
আমি: অসম্ভব ভাল, ঘন্ট বল্ কেমন লাগল?
ঘন্ট: আসলে কি বলতো বাবা — সামনে থেকে একটা অন্য  ব্যাপার — জানো, একটা গান লিখেছে ‘জাতিস্মর’ —-  জাস্ট অসাধারণ!
কাকু: আচ্ছা, ‘পাগল’ গায়  নি?
ঘন্ট: না
কাকু: ইস্ ! ওটা গাইলো না !

কাকু: মোয়া, এবারে তুমি ন্যাকামিতে পদ্মশ্রী পেয়েছো !
আমি: আর ঘন্ট ? ঘন্ট কিছু পাবে না?
কাকু: হ্যাঁ নিশ্চই! ঘন্টকেও দেওয়া হবে — বল্‌দামিতে !

ঘন্ট: বাবা তুমি  পিক্শনারি  (Pictionary) খেলার সময় যে থ্রোট (throat) এঁকেছো মোয়া সেটাকে চকোবার আইসক্রিম বলছে।
কাকু: কি, আমি এত খারাপ আঁকি? ধরে নিয়ে আয় মোয়াকে! মোয়া  …  মোয়া!
আমি: সত্যি ঘণ্ট — তুই সব কথা না বলে থাকতে পারিস না — না? আশ্চর্য।

কাকু: মোয়া, আজকে রাত্রে TV-তে `Wait Until Dark’ আছে — ঘুমিয়ে পড়বি না।
আমি: সেটা কেমন ছবি?
কাকু: সেকি? `Wait Until Dark’ দেখিস নি? অড্রি হেপ্‌বার্ন্-এর কোন্‌ সিনেমা দেখেছিস?
আমি: একটাও নয়।
কাকু: এ বাবা! অড্রি হেপ্‌বার্ন্-এর কোন  সিনেমা -ই দেখিসনি? তুই এক পায়ে কেড্স্ পর! অড্রি হেপ্‌বার্ন্-কে চিনিস তো?
আমি: না
কাকু: তুই অড্রি হেপ্‌বার্ন্-কেও চিনিস না? তুই আদ্ধেক কেড্স্ পর!

সে চলে গেল, বলে গেল না– সে কোথায় গেল ফিরে এল না।
সে যেতে যেতে চেয়ে গেল কী যেন গেয়ে গেল–
তাই আপন-মনে বসে আছি কুসুমবনেতে।
সে ঢেউয়ের মতন ভেসে গেছে, চাঁদের আলোর দেশে গেছে,
যেখান দিয়ে হেসে গেছে, হাসি তার রেখে গেছে রে–

Leave a comment